পদ্মাপ্রবাহ ডেস্ক/
কেরালার কোঝিকোড বিমানবন্দরে অবতরণ করার সময়ে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৩৭ বিমানটিতে মোট ১৯০ জন আরোহী ছিল। বিমানটি দুবাই থেকে আসছিল। বৃষ্টির কারণে কোঝিকোড বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং রানেওয়ে অতিক্রম করে সামনের উপত্যকায় পড়ে ভেঙে দ্ইু টুকরো হয়ে যায় বলে জানিয়েছে বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের নিয়ে ফিরছিলো বিমানটি।
কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারায়ই ভিজায়ান জানিয়েছেন উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত হয়েছে এবং আহতদের হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
আহতদের মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন ঐ অঞ্চলের একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা।
এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে বিমানটির দু’জন পাইলটও ছিলেন।
কী জানা যাচ্ছে দুর্ঘটনা সম্পর্কে?
ফ্লাইট ওঢ ১১৩৪ এ যাত্রী ছিল ১৮৪ জন আর ক্রু ছিল ৬ জন।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ৪০মিনিটে দ্বিতীয়বার কোঝিকোড বিমানবন্দরে নামার সময় বিমানটি ক্র্যাশ করে। ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে প্রথম চেষ্টায় পাইলটরা বিমানটি ল্যান্ড করাতে পারেননি।
ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী হারদ্বীপ সিং পুরি টুইট করেছেন যে বিমানটি ‘বৃষ্টিভেজা রানওয়ে পার করে এগিয়ে যায়’, তারপর ৩৫ ফুট ঢালু পথ পার করে দুই টুকরো হয়ে যায়।
এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি দুবাই থেকে বিদেশে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে আসছিল।
ফ্লাইট ওঢ ১১৩৪ এ যাত্রী ছিল ১৮৪ জন আর ক্রু ছিল ৬ জন।
ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ডি জি সি এ জানিয়েছে যে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই বিমানটি অবতরণ করছিল। দৃশ্যমানতা ছিল ২০০০ মিটার।
বিমানটি রানওয়ে ওয়ান জিরো ছোঁয়ার পরে না থেমেই রানওয়ের শেষ মাথায় চলে যায় আর তার পরে সেটি ছাড়িয়ে সামনের উপত্যকায় গিয়ে পড়ে। তখনই বিমানটি দুটো টুকরো হয়ে যায়।
ভারতের একজন বিমান নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন মোহন রঙ্গনাথন দুর্ঘটনার পর এন ডি টি ভি চ্যানেলকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন যে তিনি নয় বছর আগে কোঝিকোড বিমানবন্দরের ওই রানওয়েটি পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদন দিয়েছিলেন, যেখানে এই রানওয়ে ওয়ান জিরোর নিরাপত্তায় যে বড়সড় ঝুঁকি আছে, সেটা উল্লেখ করেছিলেন।
তিনি বলছেন ওই রানওয়েটি ঢালু এবং তারপরেই প্রায় দুশো মিটার গভীর উপত্যকা.. কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে সেখানে পৌছানোও কষ্টকর হবে বলেও জানান ক্যাপ্টেন রঙ্গনাথন।
ভারতের জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনীর মহাসচিব এসএন প্রধান বিবিসিকে বলেন কোঝিকোড বিমনবন্দরে ‘টেবল-টপ রানওয়ে’, যেখানে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাওয়ার পর একটি বড় গর্তে পড়ে বিমানটি।
ভারতে এরকম বিমান দুর্ঘটনা আগেও কি হয়েছে?
এর আগেও বর্ষাকালে এরকম বড় ধরণের বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে ভারতে।
২০১০ সালের মে মাসে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান মাঙ্গালোর বিমানবন্দরের রানওয়ে অতিক্রম করে – যেই দুর্ঘটনায় ১৫৮ জন মারা গিয়েছিল।
মাঙ্গালোরে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে একই ধরণের একটি ঘটনা ঘটেছিল। তবে ঐ দুর্ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। (সূত্র- বিবিসি)