বিপ্লবী হীম চরন কানঙ্গ,প্যারিসে গিয়ে একজন রুশ বিপ্লবীর মাধ্যমে বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ নেন। দেশে এসে প্রশিক্ষণ দেন আরো পাঁচজনকে। একজন ছিলেন অন্যতম ক্ষুদিরাম বসু । কিংসফোর্ড গাড়িতে না থাকায় ক্ষুদিরামের ছোড়া বোমায় মৃত্যু হয়েছিল ভারতীয় দুই মহিলার।ক্ষুদিরামসহ একসাথে ফাঁসি হয়েছিল ৩৪ জন বিপ্লবীর। চিটাগাং থানার অস্ত্রভাণ্ডার লুট করার জন্য মাস্টারদা সূর্যসেনের ফাঁসি হয় ৩৪ সালে। প্রীতিলতা সেন একই মামলার আসামি স্বেচ্ছায় আত্মাহূতী বরণ করেন ৩৩ সালে।
ক্ষুদিরাম,মাস্টারদা সূর্যসেন, ভারতবর্ষের প্রথম বোমা প্রশিক্ষক হীম চরন কানঙ্গ ,বাঘাযতীন সহ আমাদের পূর্বপুরুষের জীবনের বিনিময়ে ব্রিটিশ কে তাড়িয়ে ৪৭ সালে স্বাধীন হয়েছিলাম। পূর্বপুরুষদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পেয়েছিলাম ৪৭ এর স্বাধীনতা। ব্রিটিশ তাড়ানোর একটা দিন আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করতে পারলাম না। কেন? ব্যর্থতা টা কার? ৫৩ বছর ব্যাপী আমরা কি নিজেদের ভাগ্য বদলাতে শুধুই ভাগাভাগি নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম? বেগম পাড়ায় বাড়ি বহরের জন্যই কি প্রাণ দিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধারা? মুক্তিযোদ্ধার চেতনাকে ঘোসা মাজা করে অনেক ফায়দা লোটা হয়েছে সরলীকরণ করলে মুক্তিযোদ্ধ এখন কষ্ট পাচ্ছে।
কিন্তু সত্য কথা, একজন মুক্তিযোদ্ধা কখনো নিজস্ব ফায়দা লোটার জন্য যুদ্ধ করেন নাই দেশকে ভালোবেসেই যুদ্ধ করেছিলেন জীবন দিয়েছিলেন। এ যেন কান ফেটে যাওয়ার মত নীরবতা । কার্পেটের নিচে সবকিছু চাপা দেওয়া যায় না। দুর্ভাগ্য ৪৭ থেকে ৭১ পর্যন্ত থাকলাম পাকিস্তানের গুহার ভেতর। প্লেটোর মতে গুহার একমাত্র ভেতর থেকেই খোলা যায়। তাই ভেতর থেকেই ৯ মাস যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানের গুহা থেকে বের হয়ে ৭১ পেলাম। ২৬শে মার্চ ১৯৭১। মহান স্বাধীনতা দিবস। লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত জাতীয় দিবস। বিশ্বের বুকে লাল সবুজের পতাকা ওড়ানোর দিন।
১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনতা পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামের সূচনা করে। আর এই দিনেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছিল- তাই ২৬শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। দেশমাতৃকাকে মুক্ত করার লক্ষ্যে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় বিজয়ের লাল সূর্য। আমরা স্বাধীন হলাম। পেলাম স্বাধীন সার্বভৌম দেশ বাংলাদেশ। অর্থাৎ ১৯৭১-এ জন্ম নেয়া বাংলাদেশটির বয়স এখন ৫৩ বছর। এখন আমরা কোথায় আছি একমাত্র আল্লাহই জানে।
প্রতিটা মানুষের মেধা মনণে অনু পরমানুতে রক্তের শিরাতে একই ব্যাপ্তি একই উৎকণ্ঠা ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় না। উৎকোচ ছাড়া কোন ফাইল স্বাক্ষর হয় না ভূমি অফিস থেকে শুরু করে শিক্ষা,ইনকাম ট্যাক্স, বিআরটিএ প্রতিটা ক্ষেত্রে। এমনকি ইউনিয়ন কাউন্সিলে আইডি কার্ডের ভুল সংশোধন করতে গেলে টাকা গুনতে হয়। শিক্ষা খাতে বাজেটের ১০ পার্সেন্ট চাই। পরিমাণগত শিক্ষা যথেষ্ট হয়েছে গুণগতমান বাড়ানো হোক ঘূনে ধরা শিক্ষা পদ্ধতি, স্বজন-প্রীতিমুলক শিক্ষা পদ্ধতি , এবং টাকার বিনিময় শিক্ষক হওয়ার প্রবণতা বন্ধ করা হোক। প্রকৃত মেধাবীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হোক। শিক্ষার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিই এটাই হোক এবারের স্বাধীনতা বর্ষের স্লোগান।
লেখক- কলিম উদ্দিন