বড়াইগ্রামে বাসযাত্রীর বুদ্ধিমত্তায় পথে আটকে যায় ডাকাতি হওয়া বাসটি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাসযাত্রীর বুদ্ধিমত্তায় ও পুলিশি অভিযানে গত মঙ্গলবার ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে বড়াইগ্রাম থানা মোড়ে আটকে যায় টাঙ্গাইল এলাকায় ডাকাতি হওয়া যাত্রীবাহীবাস। পুলিশ বাস সহ চালক বাবলু,সুপারভাইজার মাহাবুব আলম ও সহকারি সুমন ইসলামকে থানা হেফাজতে নিয়ে আসে। এসময় অর্থ ও সহায় সম্বলহীন যাত্রীদের অন্য বাসে তাদের নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যেতে সহযোগিতা করেন স্থানীয় জনগণ ও পুলিশ। পরে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত বলে
যাত্রীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে চালক, সুপারভাইজার ও সহকারিকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।এ ব্যাপারে তদন্তের জন্য বৃহষ্পতিবার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণের বড়াইগ্রাম থানা এলাকায় আসতে পারেন বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম।বাসটিতে থাকা উপজেলার ভুক্তভোগী যাত্রীরা হলেন চক বড়াইগ্রামের মোজাহার আলী খলিফার পুত্র উমর আলী (৫২), মৃত নাজমুল হোসেনের পুত্র সোহাগ (২২) ও মওখাড়া গ্রামের মজনু আকন্দ (৭০)। তারা জানান, যাত্রীদের কাছে থাকা টাকা, স্বার্নালঙ্কার, মোবাইল অস্ত্রের মুখে কেড়ে নিলেও সোহাগ তার ছোট বাটন ফোন কৌশলে পিঠের নিচে রেখে দেয়। সে সময় ডাকাত দল তাকে চিত করে সিটের পাশে ফেলে বুকের উপর পা চাপা দিয়ে অস্ত্রের মুখে ধরে
রাখে। ডাকাতির পর ডাকাত দল বাস থেকে নেমে গেলে সোহাগ চুপি-চুপি বিষয়টি তার মামা হানিফকে জানায়
এবং পুলিশ ও আত্মীয়স্বজন নিয়ে বড়াইগ্রাম থানা মোড়ে বাসটিকে আটকানোর কথা বলে। অপরদিকে গোপনে
থানা মোড়ের আগে কোনো যাত্রীকে কোনো স্থানে না নামার অনুরোধ জানান। সোহাগের কথানুযায়ী থানা মোড়ে পৌছালে গতিরোধ করা হয় বাসটির। তারা আরো জানান, সোহাগের নানা উমর আলী গুড় ও শুপারী ব্যবসায়ী। তার সাথে তাকে সহযোগিতা করার জন্য ঢাকায় যান সোহাগ। গুড় ও শুপারী এক লক্ষ ২১ হাজার টাকা বিক্রয়ের পর মাত্র এক হাজার টকা খরচ হয়। বাকী টাকা ডাকাতরা কেড়ে নেয়। অনুরুপভাবে মজনু আকন্দের কাছে থাকা ৪৬ হাজার টাকা নেয়। বাসে প্রায় ৫৫ জন যাত্রী ছিল। তাদের মধ্যে মহিলা ছিল ৮/৯ জন। সবার কাছে থাকা টাকা পয়সা কেড়ে নেয়। ১৮/১৯ বছরের তিন মহিলা যাত্রীকে বাসের পিছনের দিকে সিটে নিয়ে শ্লিলতা হানির চেষ্টা করে। তখন তারা খুব চিৎকার করে। তাদের মধ্যে একজন হিন্দু মহিলাও ছিল। সে সময় তারা যাত্রীদের কয়েকজনকে ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত করে, লাঠিপেটা করে। তিন ঘন্টা যাবত তান্ডব চালায় তারা বাসটির মধ্যে। তারপর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এলাকায় এসে তারা নেমে যায়।
ভুক্তভোগী উমর আলী জানান সোমবার রাত ১১টার দিকে ঢাকার গাবতলী থেকে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রাজশাহী ট্রাভেলস
বাসটি রওনা হয়। আমাদের পাশে ৪ জন ডাকাত যাত্রীবেশে বসে। তাদের সাথে চুপি-চুপি কথা বলে সুভারভাইজার।
বাসটি চন্দ্রা থেকে আরো ৪ জন যাত্রী নিয়ে রওনা দেয়। কিছুদূর যাওয়ার পর কোনো বাধা ছাড়াই সহজেই উক্ত ৮ জন
ডাকাতদল বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এতে ডাকাতির সাথে বাস চালক,সুপারভাইজার ও সহকারি জড়িত রয়েছে বলে
ধারণা করা হয়।বড়াইগ্রাম থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল টাঙ্গাইল জেলায় হওয়ায় আইনগত প্রক্রিয়া সেখানে হবে।
বড়াইগ্রাম প্রতিনিধিঃ রায়হান সরকার