অভ্র ভট্টাচার্য
মনে আছে?
সিরিয়ার সেই তিন বছরের ছেলেটির কথা
বোমায় ক্ষতবিক্ষত শরীর নিয়ে
মরে যাবার আগে যে বলেছিল-
‘আমি ঈশ্বরকে সব বলে দেব’
সে হয়তো ঈশ্বরকে সব বলে দিয়েছে।
হয়তো বলে দিয়েছে –
আমাদের পৈশাচিকতার কথা;
আমাদের লোভের কথা;
আমাদের অসভ্যতার কথা;
আমাদের নির্যাতনের কথা।
আমরা মানুষ মেরেছি হাজারে হাজার,
আমরা একে অপরকে ধ্বংস করার জন্য
মারণাস্ত্র বানিয়েছি লক্ষ-কোটি,
মানুষে মানুষে বিভেদ বাড়ানোর জন্য
তৈরি করেছি নানা গোপন অস্ত্র।
সে হয়তো ঈশ্বরকে সব বলে দিয়েছে।
সে হয়তো ঈশ্বরকে সব বলে দিয়েছে।
বলেছে সেই পাখিটির কথা,
যে আর আকাশে ওড়ে না;
বলেছে সেই আকাশের কথা,
যে একদিন নীল ছিল;
বলেছে সেই বাতাসের কথা,
যে একদিন নির্মল ছিল;
বলেছে সেই পৃথিবীর কথা,
যে একদিন সবার ছিল।
এই সবার পৃথিবীকে
আমরা ভাগ করেছি ইচ্ছেমতো।
ধর্মের নামে, দেশের নামে, ভাষার নামে
মানুষকে দূরে সরিয়েছি।
চামড়ার রং দিয়ে, গণতন্ত্রের নাম দিয়ে
কেটে টুকরো করেছি আমাদের।
সাগরপাড়ে পরে থাকা আ্যালান কুর্দি,
কাঁটাতারে ঝুলতে থাকা ফেলানি
হয়তো সব বলে দিয়েছে ঈশ্বরকে।
ঈশ্বর তার পৃথিবী ফেরত চেয়েছেন এবার।
তিনি হয়তো শুনেছেন সব অভিযোগ।
তিনি হয়তো শুনেছেন প্রকৃতির আর্তনাদ।
তিনি হয়তো শুনেছেন সেই পাখিটির কান্না।
একদিন হয়তো সব ঠিক হবে,
কিন্তু আমরা কি সত্যিই
মানুষ হবো?