পদ্মাপ্রবাহ ডেস্ক /
করোনাকালে বেকার হয়ে পড়া হতদরিদ্র পরিবারকে মানবিক সহায়তা হিসাবে খাদ্যসহায়তা দেবে সরকার। যেসব খেটে খাওয়া মানুষ কর্মহীন হয়েছেন, তারাই কেবল সহায়তা পাবেন। খবর ইত্তেফাকের
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোহসীন গতকাল মঙ্গলবার ইত্তেফাককে জানান, ইতিমধ্যে ১২১ কোটি টাকা বরাদ্দ ছাড় করা হয়েছে। ৬৪ জেলা প্রশাসকের অনুকূলে এ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সারা দেশে আপতত ২৪ লাখ ২০ হাজার মানুষ এই সহায়তার আওতায় আসবেন। প্রতি জন পাবেন ৫০০ টাকার খাদ্য সহায়তা। প্রয়োজনে পর্যায়ক্রমে এ সহায়তার আওতা বাড়ানো হবে।
এছাড়া লকডাউন দীর্ঘায়িত হলে ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ১০ কোটি টাকার প্যাকেটজাত খাদ্য বিতরণ করা হবে। এরই মধ্যে ৭ কোটি টাকার প্যাকেট খাদ্য কেনার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। এছাড়া পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোকে ফিডিং (ভিজিএফ) কর্মসূচির আওতায় চালের পরিবর্তে এবার নগদ টাকা বিতরণ করা হবে। ১ কোটি ৯ হাজার লোক এই কর্মসূচির আওতায় থাকবে। প্রতি কার্ডের বিপরীতে সাড়ে ৪০০ টাকা করে দেওয়া হবে। টাকা বরাদ্দের জন্য ইতিমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী জুন পর্যন্ত সারা দেশে সহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে। তবে তা এককালীন না মাসিক সে বিষয় এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানায়, মানবিক সহায়তা ইউনিয়ন পর্যায়ে দেওয়া হবে। প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের জন্য আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ থাকবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) তত্ত্বাবধানে প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা তালিকা তৈরি করবেন। ঐ তালিকা অনুযায়ী প্রত্যেককে ৫০০ টাকা দেওয়া হবে। তদারকি করবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। সুবিধাভোগী প্রত্যেককেই কিউআর (কুইক রেসপন্স) কোডযুক্ত কার্ড দেওয়া হবে। যাতে করে সহজেই এই কর্মসূচির সহায়তাভোগী অন্য কর্মসূচির সহায়তা পেতে না পারেন। সার্বিক বিষয়টি তদারক করবেন জেলা প্রশাসক।
এ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, হতদরিদ্রদের মানবিক সহায়তা দেওয়ার জন্য অর্থ ছাড় দেওয়া হয়েছে। সব জেলা প্রশাসককে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আসন্ন ঈদে এবার নগদ অর্থ দেওয়া হবে। প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। আগামী জুন জুড়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি সহায়তা চলবে। ১ কোটি ৯ হাজার পরিবার সহায়তা পাবেন।
সচিব আরো বলেন, আগামী ১৫-২০ দিন পর ধান কাটার মৌসুম শুরু হবে। তখন কৃষকরা মাঠে ফসল ওঠানোর কাজে নিয়োজত থাকবে। তদের আয় রোজগারের ব্যবস্থা হবে। এর সঙ্গে খাদ্যসহায়তা থাকলে ভালোভাবে জীবন-জীবিকা চালাতে পারবে। আর্থিক সংকট অনেকাংশে লাঘব হবে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধা যারা নিচ্ছেন তারা নগদ সহায়তা পাবেন না। এ লক্ষ্যে একটা সফটওয়্যার করা হয়েছে।
জানা গেছে, পরিবারভিত্তিক মানবিক সহায়তা কার্ড রয়েছে। তাদের কার্ডে ১২টি তথ্য লিপিবদ্ধ করা আছে। পরিবার প্রধানের নাম, পিতা বা স্বামীর নাম, জন্মতারিখ, বয়স, লিঙ্গ, পেশা, জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন নম্বর, মোবাইল নম্বর, পরিবারের সদস্য সংখ্যার (পুরুষ, মহিলা, হিজড়া, শিশু প্রতিবন্ধী আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে) তথ্য রয়েছে। আগে কোনো সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় থাকলে তার নাম, বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানাও সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে একাধিক জেলা প্রশাসক জানান, ইতিমধ্যে ওয়ার্ডভিত্তিক বিভাজনের কাজ শুরু হয়েছে। যারা কোনো ধরনের সামাজিক সুবিধার আওতায় নেই তাদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। পরে সেসব নাম একটা সফটওয়্যারে সংরক্ষণ করা হবে। এর মাধমে এসব নাম যে কোনো জায়গা থেকে দেখা যাবে বা জানা যাবে, কারা সব সুবিধা ভোগ করছেন।