মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত ড.এম এ ওয়াজেদ মিয়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় লালপুর, নরেন্দ্রপুর কৃষি খামারে প্রতিষ্ঠার দাবী সংক্রান্ত প্রস্তাবনার সার সংক্ষেপ।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জীবন নিংড়ানো ভালবাসা আর সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের এই দেশ। সর্বস্ব ত্যাগী সেই জনক এঁর যোগ্য উত্তরসূরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, যার দীর্ঘ নেতৃত্বের কারনেই অসংখ্য মাইলফলক অতিক্রম করে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্ব দরবারে আমরা আজ প্রশ্নাতীত ভাবে স্বীকৃত। তিনি জনগণের ভালবাসা আর বিশ্বাসকে হৃদয়ে ধারন করে দুঃসাহসী এক নেতৃত্বের দ্বারা জাতিকে গড়ে তুলেছেন গভীর আত্মবিশ্বাসী এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে অর্জন করেছেন এক বিস্ময়কর সাফল্য। ন্যায় প্রতিষ্ঠার প্রতি সর্বদা নিষ্ঠাবান থেকে,মেধা শ্রম আর সৃজনশীলতার দৃঢ় সমন্বয় নিজ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে ঘটিয়েই হয়ে উঠেছেন তিনি আমাদের ন্যায় আর ঐক্যের প্রতিক এবং একমাত্র কান্ডারী। গনতন্ত্র এবং উন্নয়ন দুটি শর্তই যাঁর রাজনীতির প্রধান অঙ্গিকার, তাঁর হাত দিয়েই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া শুধুই এখন সময়ের ব্যাপার। কারণ তিনি সমস্ত হারিয়ে বাংলার জনগনকেই নিজের পরিবার করে বেঁচে আছেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতেই চলমান কৃষি বিপ্লবের সূচনা এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পুর্নতা সহ শিক্ষা বিস্তারে অনন্য কৃতিত্ব তাঁরই। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি অত্যান্ত সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে দেশে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের সদয় অনুমোদন দিয়েছেন। আমরা গভীর ভাবে কৃতজ্ঞ যে, প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় যা আমাদের নাটোর জেলায় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
নাটোর জেলায় প্রস্তাবিত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় টি প্রতিষ্ঠার জন্য স্থানীয় ভাবে উপযুক্ততার প্রশ্নে আমাদের লালপুর উপজেলার নরেন্দ্র পুর কৃষি খামারে প্রতিষ্ঠার যথার্থতা সকল মহলের অবগতির জন্য বিদ্যমান উপাদান ও সুবিধা সমুহ উল্লেখ করা গেল।
১/ উঁচু সমতলভূমি পরিবেষ্টিত লালপুর উপজেলা মুলতঃ কৃষি নির্ভর এবং এই জনপদে আবহমানকাল থেকে পর্যাপ্ত রবিশস্য সহ সকল কৃষি পন্যই উৎপাদনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত আছে।
২/ একসাথে ৮০০ ( আটশত) একর উঁচু সমতল সরকারি ভূমি সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের মত বৃহৎ প্রতিষ্ঠান স্থাপনে বর্নিত উপাদান এবং সুবিধা সমুহ জেলার অন্য কোন অঞ্চলে নাই। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ভূমি ক্রয়, অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন বাবদ প্রাথমিক ভাবে বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রীয় অর্থ ও সময় স্বাশ্রয় নিশ্চিত হবে।
৩/ ভৌগোলিক ভাবে লালপুর উপজেলা বন্যা জলোচ্ছ্বাস সহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগমুক্ত হওয়ায় নিরবচ্ছিন্ন জনজীবন চলমান আবহমানকাল থেকেই। উপজেলা ঘেঁষে পদ্মা নদী প্রবাহিত হওয়ায় সমাজজীবনে নদী সংশ্লিষ্ট সকল সুবিধা বিদ্যমান। বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন কল্পে অবকাঠামো নির্মাণ সহ আনুষঙ্গিক সকল কাজে নির্মান উপকরন সমুহ পর্যাপ্ত এবং সহজলভ্য।
৪/ যোগাযোগ নেটওয়ার্ক হিসেবে লালপুর উপজেলার সাথে আকাশ পথ, রেলপথ, নদী পথ এবং সড়ক পথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ সুবিধা চলমান। যেমন লালপুর উপজেলার সাথে ৪টি রেলওয়ে ষ্টেশন (আব্দুলপুর,আজিমনগর,ঈশ্বরদী বাইপাস এবং মাঝগ্রাম)। এর মধ্যে ২টি রেলওয়ে জংশন স্টেশন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় আমাদের প্রস্তাবিত স্থান হতে ঈশ্বরদী বিমানবন্দরের দুরত্ব মাত্র ৫ কিমি। পাশে পদ্মা নদী প্রবাহিত হওয়ায় জলপথে পন্য পরিবহন সহ যাতায়াত সুবিধা। সড়ক পথে ঢাকা রাজশাহী ভায়া বনপাড়া এবং পাবনা রাজশাহী ভায়া লালপুর সহ সকল অঞ্চলের সাথে পর্যাপ্ত সড়ক সুবিধা স্থায়ী ভাবে চলমান আছে।
৫/ প্রাতিষ্ঠানিক এবং অবকাঠামোগত ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত স্থান নরেন্দ্রপুর কৃষি খামার হতে মাত্র ৬ কিমি কাদিরাবাদ সেনানিবাসের অবস্থান। একেবারেই সন্নিকটে জেলা যুব উন্নয়ন কমপ্লেক্স এবং ফায়ার সার্ভিস স্টেশন। মাত্র ৬ কিমি মধ্যে ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট, ডাল ও তৈলবীজ গবেষণা কেন্দ্র, আরো সন্নিকটে ইক্ষু বীজ বর্ধন খামার, সরকারি হাসপাতাল ও পশু হাসপাতাল, লালপুর পল্লীবিদ্যুত সাবজোন অফিস অবস্থিত। সেই সাথে ৪২টি সরকারি পুকুর আছে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত গবেষণা সহ প্রায়োগিক কার্যক্রম তরান্বিত হবে।
৬/ বিনোদন হিসেবে নরেন্দ্রপুর কৃষি খামারের সাথেই আধুনিক সুবিধা সম্বলিত পূর্নাঙ্গ স্টেডিয়াম এবং মাত্র ৪ কিমি দুরে ৩০ একর আয়তনের নয়নাভিরাম গ্রীনভ্যালী পার্ক অবস্থিত। কৃষি খামারের উভয় পাশে পর্যাপ্ত সুবিধা যুক্ত গোপালপুর ও লালপুর বাজার অবস্থিত।
সর্বপরি এখানে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে কোনরূপ জমি ক্রয়, অধিগ্রহণ অথবা কোন বাড়িঘর বা বসতি উচ্ছেদের নুন্যতম কোন প্রয়োজন হবে না। যা কোন বৃহৎ প্রকল্প স্থাপনের সর্বাধিক সুবিধা এবং ইতিবাচক দিক।
!!! আরো বিস্তর সুবিধাদি যা উল্লেখ করতে গেলে লিখার কলেবর অনেকটা বৃদ্ধি পায়!!!
এলাকার পক্ষে ইতিমধ্যেই সুনির্দিষ্ট একটি প্রস্তাবনা স্মারকলিপি আকারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমীপে যথাযথ কতৃপক্ষের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়েছে। এলাকার স্বার্বজনিন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের নিমিত্তে সকল মহলের একাত্মতা এবং সহযোগিতা কামনা করা হচ্ছে। সেই সাথে সকলকে অবহিতকরনের জন্য শেয়ার করার বিনীত অনুরোধ রলো।
আপনারা জানেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী – ন্যায়ের পক্ষে যাঁর দীর্ঘ বিরামহীন, ক্লান্তিহীন পথচলা, ১৮ কোটি মানুষের সমাজ এবং রাষ্ট্রের সকল কিছুতেই যাঁর ভাবনা এবং উপস্থিতি অনস্বীকার্য। কোন ন্যায়, যৌক্তিক এবং যথার্থ আবেদন বা দাবী তাঁর দ্বারা উপেক্ষিত বা প্রত্যাক্ষ্যাত হয়েছে এমন কোন নজির নাই। প্রস্তাবিত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পক্ষেও আমাদের এই ন্যায় এবং যৌক্তিক আবেদন ও দাবীর প্রতি তিনি সদয় সম্মতি দিবেন ইনশাল্লাহ। বহু কাংখিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জন্মশতবর্ষ পালনের প্রাক্কালে আমাদের সেই আশা, তাঁরই আত্মজা ও যোগ্য উত্তরসূরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করবেন। সেটিই আমাদের একান্ত কামনা। ( লেখাটি নাটোরর লালপুরে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক তাহাজ উদ্দিনের )