আরিফুল ইসলাম তপু /
এলাকার নকশায় উল্লেখ রয়েছে। বাসিন্দাদের স্মৃতিতে এখনও উজ্বল। উদ্ধারের দাবিতে সরব হয়েছেন স্থানীয়রা,কিন্তু সরকারি নজরদারির অভাবে বেমালুম বেদখল হয়ে গিয়েছে সেই রাস্তা। বলছি, নাটোরের বাগাতিপাড়া পৌর এলাকার বাগাতিপাড়া বি.এম কলেজ থেকে বাগাতিপাড়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসা পর্যন্ত রাস্তার বেহাল অবস্থার কথা। রাস্তাটির সিংহভাগ এখন বেদখল হয়ে গিয়ে ৩০ ফিট রাস্তা এখন ৫ ফিটে!
সরেজমিনে দেখা যায়, মুলত কৃষি প্রধান এলাকা এটি। গোচারণ এব, মাঠে গবাদি পশু এবং গরুর গাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য ওই রাস্তাটি এলাকার মানুষের কাছে ‘গো-পথ’ হিসেবে এখনও পরিচিত। ঘটনা হল, এলাকার কৃষিজীবী ইয়াসিন সরকার গং, কামরুল গং, আবুল হোসেন গং, রাজ্জাক গং, নব গং, বারিক গং, মৃদু গং, সাইফুল গং, উয়াছাদ গং, কালাম গং ও ওয়াহেদ গং রাস্তাটি নিজেদের জমির মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ,ফলে সমস্যায় পড়েছেন এলাকাবাসি। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাটি দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হিসেবে প্রতিদিন হাজার লোক যাতায়াত করে। দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগ সড়ক হওয়ায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অবিভাবক ও জনসাধারণের রাস্তা দিয়ে চলাফেরায় প্রতিবন্দকতার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে হাসপাতালগামী রোগী, স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণের চলাচলে সিমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, ওই রাস্তাটি উদ্ধার করে পাকা করা গেলে বহুমুখী সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথমত একশো দিন কাজের প্রকল্পে ব্যাপক কর্ম সংস্থানের সুযোগ রয়েছে। দ্বিতীয়ত ওই রাস্তাটি লাগোয়া নড়ইগাছা-নওশারার ভিতর হয়ে উপজেলা সদর হাসপাতাল-বাগাতিপাড়া সরকারি ডিগ্রি কলেজের রাস্তার সঙ্গে সংযুক্ত করা হলে, একটি নতুন রুটের সৃষ্টি হতে পারে। সেক্ষেত্রে ওই এলাকায় নতুন আবাসনের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও তাঁদের যাতায়তের রাস্তাটি ফিরে পেতে পারেন।
নওশারা মহল্লার দেলোয়ার হোসেন বলেন, “পূর্ব পুরুষদের মুখে শুনেছি, ওই পথ দিয়েই এক সময়ে মাঠে গরুর, মহিষ এবং গাড়ি নিয়ে যাওয়া আসা করা হত। মাঠ থেকে ফসলও নিয়ে আসা হত। ভাত মাছ না খেয়ে মানুষ রাস্তা খেয়ে ফেলায়, ওই রাস্তাটি অধিকাংশ আজ বেদখল হয়ে যাওয়ায় আমাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। হয় ঘুরপথে, কিংবা ফসল নষ্ট করে যাতায়ত করতে হচ্ছে।”
বাগাতিপাড়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম দাবী করেন, রাস্তাটি দিন দিন বেদখল হয়ে যাচ্ছে। রাস্তা থেকে কালভাট তিন ফিট উচু হওয়ায় আমার প্রতিষ্ঠানে চলাফেরার সমস্যা হচ্ছে, ফলে মালামাল প্রায় আধা কিলোমিটার মাথার করে প্রতিষ্ঠানে নিতে হয়। রাস্তাটি কাচা হওয়ায় বৃষ্টি হলে কর্দমগ্ন হয়ে যায়। দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাটি উদ্ধার করে পাকা করনের দাবীও জানান তিনি।
বিষয়টি নিয়ে ‘নিরাপদ সড়কচাই’ সংগঠনের বাগাতিপাড়া সভাপতি আরিফুল ইসলাম বলেন, এই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে উভয় পাশে^র জমির মালিকগণ কেটে কেটে সরু করে ফেলেছে। যা সাধারণ মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তাই অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরাপদ ভ্রমনের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পক্ষ থেকে রাস্তাটি উদ্ধার করে সংস্কার করার দাবি জানান তিনি।
বাগাতিপাড়া পৌরসভার মেয়র মশাররফ হোসেন বলেন, নকশায় ৩০ ফিট রাস্তা থাকলেও সরেজমিনে ৫ ফিট রাস্তা পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে পৌরসভার সমন্বয় মিটিংয়ে আলোচনা করেছি। রাস্তাটি কেটে নিয়ে দখল করেছে স্থানীয় ভূমি দশ্যুরা। নিবার্হী ম্যাজিস্টেট এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি রাস্তা উদ্ধারে শিগগিরই প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।