নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার মাছিমপুর এলাকার দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা সোহানুর রহামান সোহান প্রণিবিদ্যায় দেশের মধ্যে প্রথম হয়েছেন। সে অনার্স ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের রাজশাহী কলেজ প্রাণীবিদ্যা বিভাগ থেকে সিজিপিএ ৪ পয়েন্টের মধ্যে ৩ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট পেয়ে (১৭ নম্বর) এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সকল শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ম স্থান অর্জন করে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাযায়,জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মাস্টার্স (২০১৮-২০১৯) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৃত্তি প্রদান করার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে রাজশাহী কলেজ প্রাণিবিদ্যার ১০জন শিক্ষার্থী স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে সোহানুর রহমান সোহান সিজিপিএ-৪ এর মধ্যে ৩ দশমিক ৮৭ পেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় অনার্স ২০১৪-২০১৫ বর্ষের সকল কলেজের, সকল ডিপার্টমেন্টের মধ্যে ১৭তম এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সকল শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ম স্থান অর্জন করে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছেন।
রাজশাহী কলেজের প্রাণিবিদ্য বিভাগের সহকারী অধ্যক্ষ প্রফেসর আফরোজা বানু প্রাণিবিদ্যায় সোহানুর রহমান সোহানের প্রথম হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,সোহানুর রহমান সোহান খুবই মেধাবী। সে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন অনার্স ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের রাজশাহী কলেজ প্রাণীবিদ্যা বিভাগ থেকে সিজিপিএ ৪ পয়েন্টের মধ্যে ৩ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট পেয়ে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছেন। প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সকল কলেজের সকল শিক্ষার্থীর মধ্যে ১ম স্থান অর্জন করেছে।
সোহানুর রহমান সোহান বলেন,তার বাবা দিনমজুর আবু রায়হানের প্রায় কর্মহীন হয়ে বেকার সময় কাটে। মা ফাহিমা বেগম গৃহিণী। একমাত্র বড় ভাই হাসান ইমামের উর্পাজনেই চলে তাদের সংসার। অবসরে সে নিজেও দিন মজুরী করে যা আয় হয় সব বাবা-মার হাতে তুলে দেন। বড় ভাই হাসান ইমাম (রনি) অভাবের কারণে পড়াশোনা বেশি দূর এগিয়ে নিতে পারেননি।
তিনি ঢাকায় থাই-এলুমিনিয়াম ডেকোরেশনের কাজ করেন। ছোট বোন ফারিয়া ইয়াসমিন বাগাতিপাড়া গার্লস স্কুলে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সোহানুরের বাবার সংসারে কোন দিন আধ পেটা খেয়েই দিন কাটাতে হয়। অদম্য ইচ্ছা তার সাফল্যের বাধা হতে পারেনি দারিদ্রতা। মেধাবী সোহানুর রহমান সোহান আরো লেখাপড়া করতে চান। সুযোগ পেলে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে চান। পাশাপাশি সরকারের বড় পদে চাকরী করে বাবা-মা ও ভাই-বোনের মুখে হাঁিস ফোটাতে চান।
আবু রায়হান বলেন, অভাবের কারণে বড় ছেলেকে পড়াশোনা করাতে পারেননি তাই আমাদের স্বপ্ন ছোট ছেলে সোহানকে নিয়ে। সোহানকে আরো অনেক শিক্ষিত করবেন। কিন্তু অভাবের সংসারে সে আশা পূরণ করবেন কি করে। তাই তারা তাদের মেধাবী ছেলের উচ্চ শিক্ষা অর্জনে প্রধানমন্ত্রী সহ বৃত্তবানদের সহায়তা চেয়েছেন।