পদ্মাপ্রবাহ ডেস্ক/
সেপ্টেম্বর মাসে সারাদেশে ২৭৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে । এতে আহত হয়েছে ৪৯২ জন। পাশাপাশি ৯টি নৌ-দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে ৪ জন। অপরদিকে ১১টি রেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৮ জন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের মাসিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সংগঠনটি ৭টি জাতীয় দৈনিক ৫টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে এ রিপোর্ট তৈরি করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৫৭ জন নারী ও ৩৮ জন শিশু। এককভাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। এতে ৯৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১০৬ জন নিহত হন। এছাড়া ৮৬ জন পথচারী ও৫৪ জন চালক ও হেল্পার নিহত হন।
দুর্ঘটনায় ১৩ জন বাস যাত্রী, ১১ জন ট্রাক যাত্রী, ৬ জন পিক-আপ যাত্রী, ২ জন কাভার্ডভ্যান যাত্রী, ১২ জন মাইক্রোবাস যাত্রী, ৫ জন প্রাইভেট কার যাত্রী, ৬ জন অ্যাম্বুলেন্স যাত্রী, ৮ জন ট্রলি যাত্রী, ৭ জন সিএনজি যাত্রী, ২৬ জন ইজিবাইক-অটোরিকশা যাত্রী, ৯ জন নছিমন-ভটভটি যাত্রী, ৪ জন লেগুনা যাত্রী এবং ৩ জন বাইসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১০৮টি (৩৯ দশমিক ৫৬) জাতীয় মহাসড়কে, ৬৯টি (২৫ দশমিক ২৭) আঞ্চলিক সড়কে, ৫৪ টি (১৯ দশমিক ৭৮) গ্রামীণ সড়কে এবং ৪২টি (১৫ দশমিক ৩৮) শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনাগুলোর ৭২টি (২৬ দশমিক ৩৭) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৬১টি (২২ দশমিক ৩৪) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৮৫টি (৩১ দশমিক ১৩) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৪৬টি (১৬ দশমিক ৮৪) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৯টি (৩ দশমিক ২৯) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন ও কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি; গণপরিবহণ খাতে চাঁদাবাজি।
দুর্ঘটনা রোধে বেশ কিছু সুপারিশ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। সুপারিশগুলো হচ্ছে- দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে; চালকের বেতন ও কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্বরাস্তা তৈরি করতে হবে; পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; রেল ও নৌ-পথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমাতে হবে; টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে ও ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ এর সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।