নিজস্ব প্রতিবেদক/
বশির উদ্দিনের (৫৫) ভ্যানে করে সারাদিন ঘুরে বেড়িয়েছেন তার পূর্ব পরিচিত রঞ্জু মন্ডল। দুজন গল্প করেছেন, এক সাথে চা খেয়েছেন। বশির ভাবতেও পারেনি এই রঞ্জুর হাতেই তার প্রাণ যাবে। কুষ্টিয়ার ভ্যান চালক বশির উদ্দিন হত্যার ঘটনায় আটক রঞ্জু মন্ডল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশকে।
মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার চরগোপালপুর-মিটন সড়কের পাশে ধান ক্ষেত থেকে বশির উদ্দিনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার বাড়ি পাশের উপজেলা কুমারখালীর সাঁওতা গ্রামে।
পরে এ ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। তারা প্রথমে বশিরের ভ্যানটি উদ্ধার করে সদর উপজেলার নগর মোহাম্মদপুর গ্রামে আনজেরা নামে এক গৃহবধুর বাড়ি থেকে। আনজেরা পুলিশকে জানায় তার চাচাতো ভাই রঞ্জু রাতে ভ্যানটি রেখে গেছে। পরে মঙ্গলবার রাতে সাঁওতা গ্রামের শ্বশুর বাড়ি থেকে আটক হন রঞ্জু।
আটক রঞ্জুর বরাত দিয়ে বুধবার দুপরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রহমান পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, নিহত বশির ও ঘাতক রঞ্জুর শ্বশুর বাড়ি একই এলাকায়। এই সূত্র ধরে দুজনের পরিচয়। রঞ্জু নিজের মায়ের খোঁজ খবর রাখতেন না, ভরন পোশনও দিতেন। তিনি বেশির ভাগ সময় শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন। বশিরের বিষয়টি ভাল লাগেনি। তিনি প্রায়ই মাকে ভরনপোষন দেওয়ার জন্য রঞ্জুকে অনুরোধ করতেন। এতে ক্ষুব্ধ হন রঞ্জু।
এ নিয়ে দুজনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। এই ক্ষোভ থেকে বশিরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন রঞ্জু। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৪ আগষ্ট সকালে ২০০ টাকা দিয়ে বশিরের ভ্যান ভাড়া করেন রঞ্জু। তিনি সারা দিন বশিরকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাঘুরি করেন। এক সাথে চা-ও পান করেন। এক ফাঁকে বিআরবি ক্যাবলস্ এর নিকটে ইট কেনা-বেচার দোকানের সামনে এসে প্রসাব করার কথা বলে ভ্যান থেকে নেমে কৌশলে ১টি ইট নিয়ে লুঙ্গির আড়ালে রেখে পুনরায় ভ্যানে ওঠে।
পরে রাত রাত ১০টার দিকে চরপাড়া মাঠের মধ্যে বাথরুম পেয়েছে বলে বশিরকে ভ্যান থামাতে বলে। তার কথায় ভ্যান থামালে রঞ্জু লুঙ্গির ভেতর থেকে ইট বের করে বশিরের মাথার মাঝখানে সজোরে আঘত করে। এতে ঘটনাস্থলেই বশিল মারা যায়। পরে রঞ্জু মৃতদেহটি রাস্তার পাশের ধান ক্ষেতে রেখে ভ্যান নিয়ে চলে যায়। ঘাতক রঞ্জু সদর উপজেলার মেটন গ্রামের সালামত মন্ডলের ছেলে।