নিজস্ব প্রতিবেদক/
আত্মহত্যা করার পূর্বে নিজ হাতে চিঠি লিখেছিলেন লালমনিরহাট পৌরসভার গার্ডপাড়া এলাকার নিলুফার ইয়াসমিন সুমি (৩৩)।তিনি চিরকুটে লিখে যান, ‘আমার মৃত্যুর জন্য রবি (রবিউল) দায়ী’। সেই চিরকুটে আরও লিখেন, ‘এই মোবাইল ট্রাকিং করলে তোরা বুঝতে পারবি। রবি আমাকে আত্মহত্যার জন্য অনেক দিন ধরে চাপ দিয়ে আসছে। তোরা রবিকে ছাড়িস না। ইতি সুমি।’
জানা যায়, ১০ বছর পূর্বে লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোঘলহাট ইউনিয়নের কোদালখাতা গ্রামের আব্দুস ছামাদের ছেলে রবিউল আউয়ালের (৩৭) সাথে বিয়ে হয় গার্ডপাড়া এলাকার মৃত-মনসুর আলী সরকারের সর্বকনিষ্ট মেয়ে নিলুফার ইয়াসমিন সুমির । বিয়ে করার পড়ে যৌতুকের টাকার জন্য সু-কৌশলে সুমিকে পিতার বাড়িতে রেখে যায় স্বামী। পরিবার ও সুমির নিজ চেষ্টায় কয়েকবার স্বামীর বাড়িতে গেলে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে এক সপ্তাহের বেশি স্বামীর বাড়িতে থাকতে পারেননি। তবে রবিউলের টাকার প্রয়োজন হলে সুমির বাড়িতে এসে কয়েক দিন থাকার পর কখন ৫ হাজার, কখনও ৭ হাজার বা কখনও ১০ হাজার করে টাকা নিয়ে চলে যেত তার বাড়িতে। পর্যায়ক্রমে সুমি নিজের ও মায়ের দেওয়া ২ ভরি স্বর্ণ অলংকার স্বামীকে দিয়েছিলেন। তারপড়েও সবসময় মোবাইল ফোনে সুমির পরিবারের থেকে ব্যবসা করার জন্য মোটা অংকের টাকা এবং সাথে একটি মটরসাইকেল কিনে দিতে বলত রবিউল। টাকা ও মটর সাইকেল না পেয়ে এভাবেই দিনের পর দিন মোবাইলে সুমিকে মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে রবিউল। একপর্যায়ে কিটনাশক পান করে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন সুমি।
লালমনিরহাট সদর থানার মামলা সুত্রে জানা যায়, গত ১৭ আগষ্ট দুপরে নিজ বাড়িত কীটনাশক পান করে নিলুফার ইয়াসমিন সুমি। পরিবারের লোকজন তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। পরে রাত ৮টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।