পদ্মাপ্রবাহ ডেস্ক : সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের হত্যার দিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী শাহেদুল ইসলাম সিফাত। তার জবানেই উঠে আসে ওই রাতের আসল ঘটনার চিত্র। পুলিশের করা মামলায় জামিনে মুক্তির পর হত্যাকাণ্ডের ১৩ দিনের মাথায় এ বিষয়ে কথা বলেন সিফাত।
ওই ঘটনার বর্ণনায় সিফাত বলেন, গত ৩১ জুলাই কক্সবাজার শামলাপুর চেকপোস্টে দায়িত্বরত এপিবিএন সদস্যদের তল্লাসি চৌকিতে গাড়ি থামান মেজর সিনহা। জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয় তারা। কিন্তু ড্রাম ফেলে পথ আটকায় টেকনাফ থানার পুলিশ।
তিনি আরো বলেন, আমাদের হাতে ট্রাইপড ছিলো, সম্ভবত এটা তারা ভুল বুঝতে পারে। গাড়িতে নামার সময় আমাদের হাতে কোনো অস্ত্র ছিলো না। গাড়ি থেকে নামতেই গুলির শব্দ, তারপর মাটিতে লুটিয়ে পড়ার দৃশ্য। সেদিনের ঘটনা যেন কল্পনাকেও হার মানায়।
সিফাত আরো বলেন, মেজর সিনহা দুই হাত উঁচু করে নামেন। এরপর আমি পিছনে চলে যাই। কিন্তু গাড়ির কারণে আমি আর কিছু দেখতে পাইনি। যখন তিনি নামেন তখন এক অফিসার বন্দুক তাক করে বলেন, কাল্ম ডাউন, কাল্ম ডাউন আওয়াজ শুনতে পাই। এর ভিতরে গুলির শব্দ শুনি। পরে দেখি সিনহা সাহেব শুয়ে পড়েছেন। আমি ভাবছি, হয়-তো উনার শরীরে গুলি লাগেনি। ফাঁকা আওয়াজ হয়েছে। তারপর দেখি উনার শরীর থেকে রক্ত বের হচ্ছে।
সিফাত আরো দাবি করেন, সিনহার ব্যক্তিগত অস্ত্রটিও ছিলো গাড়িতে, সিনহা নেমেছিলেন হাত উঁচু করেই।
মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনার সাক্ষী সিফাত। তিনি গত ১০ আগস্ট কক্সবাজার কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। যদিও পুরো ঘটনা সবার সামনে তুলে ধরতে ক্ষানিকটা সময়ও চেয়েছেন সিনহার সঙ্গী সিফাত ও শিপ্রা।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই টেকনাফে মেরিন ড্রাইভে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সিফাত। হত্যার পর পুলিশ সিনহারা যে রিসোর্টে উঠেছিলেন সেখানে তল্লাশি করেন। মদ ও গাঁজা রাখার অভিযোগে শিপ্রাকে গ্রেপ্তারে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে মাদক আইনে মামলা করা হয়। আর সিফাতের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করে পুলিশ।
স্টামফোর্ডের শিক্ষার্থী সিফাত, শিপ্রা দেবনাথ ও তাহসিন রিফাত নূর ‘জাস্ট গো’ নামে একটি ভ্রমণের ভিডিওচিত্র ধারণ করতে কক্সবাজারে ছিলেন। নিহত সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের ইউটিউব চ্যানেলের জন্য এটি নির্মাণ করা হচ্ছিল।