নিজস্ব প্রতিবেদক/
খাল বন্ধ করে পুকুর কাটার ফলে বৃষ্টির পানি জমে গত কয়েক মাস ধরে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে রয়েছে লালপুর উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। খাল পুনঃ খনন বিলম্বিত হচ্ছে কতিপয় পুকুর মালিকের কারনে, এর মধ্যেই আজ বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় জমে থাকা পানিতে ডুবে মারা গেছে শিশু মুন্নী (৫)। মুন্নী দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের মনিহারপুর গ্রামের মুন্নার মেয়ে।
গত ২৭ জুলাই পানিবন্দী মানুষদের দেখতে সরেজমিন পরিদর্শনে এসে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল ২ দিনের মধ্যে খাল দখলকারী পুকুর মালিকদের মাছ তুলে নিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থার নির্দেশ দেন। সাংসদের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান ও সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আলম মক্কেল কে দায়িত্ব দেন। কিন্তু সাবেক চেয়ারম্যান খালের মধ্যকার নিজ পুকুর বাচাতে খাল অবমুক্ত না করে রাস্তা খননে মনোনিবেশ করায় পানি নিষ্কাশন প্রক্রিয়া ভেস্তে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় সাংসদের ২ জন প্রতিনিধি, ৫ জন পুকুর মালিক ও এলাকার ৫ জন গন্যমান্য ব্যক্তি নিয়ে ১২ সদস্য বিশিষ্ট আরেকটি কমিটি করা হয়। সেখানেও সাবেক চেয়ারম্যান ও তার দু ছেলের পুকুর বাচানোর চেষ্টায় পানি নিষ্কাশন প্রক্রিয়া ভন্ডুল হয়ে যায়। যার ফলে পানিতে ডুবে আজ দুপুরে শিশু মুন্নীর মৃত্যু হয়।
এর মৃত্যুর জন্য দায়ী কে জানতে চাইলে শিশু মুন্নীর শোকার্ত পিতা মুন্না জানায়, পানি নিষ্কাষনে বাধাদানকারী পুকুর মালিকদের কারনে আমার মেয়ে আজ মারা গেছে। আর কোন মায়ের কোল যেনো জলাবদ্ধতার কারনে খালি না হয় সে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের সহায়তা চাচ্ছি।
দুড়দুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান জানান, ঘটনাটি বেদনাদায়ক। কতিপয় স্বার্থান্বেষী পুকুর মালিক খাল বন্ধ করে পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্থ করায় এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শিশু মৃন্নীর মৃত্যুর জন্য ঐ সব পুকুর মালিকরাই দায়ী।
নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের বর্তমান ও সাবেক দুই চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম। তারা ব্যর্থ হয়ে ১২ সদস্য বিশিষ্ট আরেকটি কমিটি করেছে। কয়েকজন পুকুর মালিকের বাধার মুখে তারাও ব্যর্থ। এ জন্য শিশু মুন্নীর মৃত্যুর জন্য কমিটির দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তিগন ও খাল খননে বাধাদানকারী পুকুর মালিকরা দায়ী।